বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি কয়টি এবং বিমান বাহিনি সম্পর্কে জানুন
আপনাদের অনেকেরই বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি কয়টি সে সম্পর্কে জানার অনেক
আগ্রহ রয়েছে। আজকের এই পোস্টটিতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি কয়টি ,বাংলাদেশ
বিমান বাহিনীর স্লোগান কি ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি কয়টি ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর স্লোগান কি
এছাড়াও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং অজানা তথ্য
জানতে পোস্টটি না টেনে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি কয়টি
বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অনেকগুলো ঘাঁটি বাংলাদেশের রয়েছে বর্তমান
বিমান বাহিনীর তথ্যমতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ছয়টি ঘাঁটি বাংলাদেশের রয়েছে
এবং কয়েকটি ইউনিট রয়েছে। ছয়টি বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটির মধ্যে ঢাকায়
অবস্থিত দুইটি একটি হলো খাদেমুল বাসার বিমান বাহিনী ঘাঁটি এবং বঙ্গবন্ধু বিমান
ঘাঁটি।
এছাড়াও রয়েছে পাহাড় কাঞ্চনপুর বিমান ঘাঁটি টাঙ্গাইলে অবস্থিত, মতিউর রহমান
বিমান বাহিনীর ঘাটি এই বিমান বাহিনীর ঘাঁটিটি যশোরে অবস্থিত। জহুরুল হক বিমান
বাহিনীর ঘাঁটি টির অবস্থান চট্টগ্রামে। এবং আরেকটি বিমান ঘাঁটি রয়েছে যেটি
কক্সবাজারে অবস্থিত। এছাড়াও বিমানবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট রয়েছে।
যেগুলো ট হলো তত্ত্বাবধান ও রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিট লালমনিরহাট, তত্ত্বাবধান ও
রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিট শমসের নগর, মৌলভীবাজার রাডার ইউনিট এবং বগুড়া রাডার ইউনিট।
বিমান বাহিনীর বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে যেগুলো তে বিমান বাহিনী
কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমি এই প্রশিক্ষণ
কেন্দ্রটি যশোরে অবস্থিত।
এই একাডেমির পাশাপাশি বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার
অনেকগুলো ফ্লাইট ইন্সট্রাক্টরস স্কুল এবং অনেকগুলো ট্রেনিং ইনস্টিটিউটস
বাংলাদেশে রয়েছে। এছাড়াও কমান্ড এন্ড স্টাফ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং অফিসার্স
ট্রেনিং স্কুল রয়েছে যেটা যশোরে অবস্থিত।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর স্লোগান কি
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সাধারণত আপনাদের প্রতিনিয়ত আকাশপথে সুরক্ষার জন্য কাজ
করে। সাধারণত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কাজ আকাশ সীমার সুরক্ষা প্রদান করা যেন
কোন জঙ্গি বিমান কিংবা কোন শত্রু আকাশপথে বাংলাদেশে আক্রমণ করতে না পারে।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি স্লোগান রয়েছে যা হলো বাংলার আকাশ রাখিব মুক্ত।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান কে
প্রতিনিয়ত যোগ্যতার ভিত্তিতে এবং বিভিন্ন ধরনের কারণে বিমানবাহিনীর প্রধান
কিংবা বিভিন্ন কর্মকর্তার পদ পরিবর্তন হয় বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর
প্রধান পদে রয়েছেন শেখ আব্দুল হান্নান তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণ একজন
অফিসার।
পূর্বের এয়ার চিফ মার্শাল অর্থাৎ বিমান বাহিনীর প্রধান মাসিহুজ্জামান
সেরনিয়াবাত অবসর গ্রহণ করেন পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১২ই জুন শেখ আব্দুল হান্নান
বিমানবাহিনী প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১২ই জুন ২০২১ সাল থেকে বাংলাদেশ
বিমান বাহিনী প্রধান হিসেবে তিনি তার কার্যক্রম শুরু করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বিমান বাহিনীর প্রধান কে ছিলেন
মুক্তিযুদ্ধে বিমানবাহিনী অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেক বিমান
বাহিনী কর্মকর্তা শহীদ হন এর মধ্যে অন্যতম হলো ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান
যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় জীবন দিয়ে দেন দেশের জন্য।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বিমানবাহিনী প্রধান বা বিমানবাহিনীর প্রথম প্রধান ছিলেন
এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আবদুল করিম খন্দকার যিনি সকল বিমানবাহিনী
কর্মকর্তাদের পরিচালনা করতেন। পরবর্তীতে তিনি বিমানবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে
রাজনীতিতে পদার্পণ করেন।
বিমান বাহিনীর প্রধানের বাড়ি
বর্তমান বিমান বাহিনীর প্রধান শেখ আব্দুল হান্নান যিনি ২০২১ সালে বিমান বাহিনী
প্রধান হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হন এবং তার কার্যক্রম শুরু করেন। মার্শাল
মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার পরে তিনি বিমান বাহিনীর প্রধান
হিসেবে নিযুক্ত হন। বিমান বাহিনী প্রধান এর বর্তমান বাড়ি বাগেরহাটে।
তিনি একজন বাংলাদেশী নাগরিক। শেখ আব্দুল হান্নান ভোলা সরকারি কলেজ সাময়িক
বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী। এবং তিনি জাতীয় প্রতিরক্ষা
বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তান থেকে নিজের গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেন। পরবর্তীতে তিনি
বাংলাদেশে চলে আসেন এবং বিমান বাহিনীতে নিজের চাকরি জীবন শুরু করেন।
বিমান বাহিনীর পদবী
প্রতিটি চাকরির মতো অনুরূপভাবে বিমানবাহিনীর বিভিন্ন ধরনের পদবী রয়েছে যেগুলো
যোগ্যতা এবং বিভিন্ন ভিত্তিতে হয়ে থাকে। বিমানবাহিনীর পদবী গুলোর মধ্যে অফিসার
সমূহের পদবী গুলো হলো এয়ার চিফ মার্শাল-এয়ার মার্শাল-এয়ার ভাইস
মার্শাল-এয়ার কমোডার-গ্রুপ ক্যাপ্টেন-উইং কমান্ডার-কোয়ার্টন লিডার-ফ্লাইট
ল্যাপটেন্যান্ট-ফ্লাইং অফিসার ইনারা সকলেই প্রথম শ্রেণীর সরকারি গেজেটেড
কর্মকর্তা।
অফিসারদের সর্বোচ্চ পদবী হলো এয়ার চিফ মার্শাল এই পদবী বিমান বাহিনী প্রধানকে
বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী প্রদান করেন। অফিসারদের পদবীর পাশাপাশি বিমান সেনাদের
পদবি রয়েছে যা হলো মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার-সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার-ওয়ারেন্ট
অফিসার-সার্জেন্ট-কর্পোরাল-এলএসি লিডিং এয়ারক্রাফট ম্যান-এসি ওয়ান অর্থাৎ
এয়ারক্রাফট ম্যান ওয়ান-এসি টু অর্থাৎ এয়ারক্রাফ্ট ম্যান 2।
এই পদবিধারী প্রতিটি কর্মকর্তা যুদ্ধবিমানকে সার্বক্ষণিক সচল রাখেন এবং আকাশ
সীমা রক্ষায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিমান সেনা কর্পোরাল এবং
সার্জেন্ট নন কমিশন অফিসার হিসেবে নিযুক্ত থাকেন এবং ওয়ারেন্ট অফিসার থেকে
মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার পর্যন্ত পদবিধারী কর্মকর্তা দের জেসিয়া অর্থাৎ
জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার বলা হয়।
বিমান বাহিনীর টেকনিক্যাল ট্রেড এর বেতন কত?
সাধারণত বিমান বাহিনীর টেকনিক্যাল ট্রেড এর নিযুক্ত কর্মকর্তারা অফিসার নন
সেক্ষেত্রে তাদের জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ এর অনুযায়ী তাদের বেতন ৯ হাজার টাকা
থেকে শুরু হয় এবং সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বেতনের পাশাপাশি তারা পান অন্যান্য
সুবিধা। পরবর্তীতে তাদের প্রমোশন হলে বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধি পায়।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর নতুন বিমান ক্রয় তালিকা
বর্তমানে
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর
অন্যান্য দেশের বিমানবাহিনীর থেকে পিছিয়ে নেই। তারা প্রতিনিয়ত তাদের আকাশ
সীমাকে শত্রুমুক্ত রাখার জন্য নিরলস পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এবং তারা
প্রতিনিয়ত অনেক যুদ্ধাস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র তাদের অভ্যন্তরে যুক্ত করছে।
বিভিন্ন ধরনের স্থির টানার বিমান সহ বিভিন্ন হেলিকপ্টার এবং মনুষ্যবিহীন আকাশ
যান রয়েছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কাছে।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর রয়েছে মিগ-২৯ এফ-৭, এর জঙ্গি বিমান। এছাড়াও পরিবহন
বিমান হিসেবে রয়েছে সি-১৩০ জে ,এ এন ৩২,সি-১৩০ বি এছাড়া অনেকগুলো প্রশিক্ষণ
বিমান রয়েছে এবং আকাশ প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে এফ এম ৯০ রয়েছে যা অত্যন্ত
শক্তি সম্পন্ন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ম্যান পোর্টেবল এয়ার ডিফেন্স
সিস্টেম রয়েছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর।
শেষ কিছু কথা
আশা করছি ব্লগ পোস্ট টি পড়ার মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি কয়টি,
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর স্লোগান কি এবং বিমান বাহিনি সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত
তথ্য জানতে পেরেছেন। প্রতিনিয়ত এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং নতুন নতুন তথ্য সবার
আগে জানতে আমাদের গুগল নিউজে ফলো করে আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন।গুগল নিউজ ফলো লিংক।