প্রিয় পাঠক আপনারা অনেকেই অর্থনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চান এছাড়াও আধুনিক
অর্থনীতির জনক কে সে সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রয়োজন হলে আজকের এই পোস্টটি
আপনাদের জন্য। আজকের এই পোস্টটিতে মুলত অর্থনৈতিক ইতিহাস কাকে বলে
এবং আধুনিক অর্থনীতির জনক কে এবং অর্থনীতিতে যাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রয়েছে তাদের সম্পর্ক বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
অর্থনৈতিক ইতিহাস কাকে বলে এবং আধুনিক অর্থনীতির জনক কে সে সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে নিতে দয়া করে পোস্ট টি না টেনে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
অর্থনৈতিক ইতিহাস কাকে বলে
অর্থনৈতিক ইতিহাস সাধারণত একটি শাখারূপে অর্থনীতির বিকাশ, পরিবর্তন এবং গঠন
প্রক্রিয়াকে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষণ করে।অর্থনৈতিক ইতিহাস অর্থনৈতিক
নীতি, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, উৎপাদন ব্যবস্থা, বাণিজ্য, শ্রমবাজার এবং
আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের ইতিহাসকে অন্তর্ভুক্ত করে। সহজভাবে বলতে গেলে, অর্থনৈতিক
ইতিহাস হলো অর্থনীতির অতীত ঘটনা ও প্রবণতাগুলোর অধ্যয়ন, যা বর্তমান ও ভবিষ্যতের
জন্য শিক্ষণীয় তথ্য সরবরাহ করে।
অর্থনৈতিক ইতিহাস অর্থনীতির পরিবর্তনশীল ধারা বিশ্লেষণ করতে বিভিন্ন পদ্ধতি
ব্যবহার করে। এটি মূলত দুটি উপায়ে অধ্যয়ন করা হয়—ব্যাপক অর্থনৈতিক ইতিহাস
(quantitative economic history) এবং বর্ণনামূলক অর্থনৈতিক ইতিহাস (qualitative
economic history)। ব্যাপক অর্থনৈতিক ইতিহাস পরিসংখ্যান ও গাণিতিক মডেল ব্যবহার
করে অর্থনৈতিক প্রবণতাগুলো বিশ্লেষণ করে।
যেখানে বর্ণনামূলক অর্থনৈতিক ইতিহাস ঐতিহাসিক দলিল, আখ্যান ও ঘটনা বিশ্লেষণের
মাধ্যমে অর্থনৈতিক পরিবর্তন বোঝার চেষ্টা করে।অর্থনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্ব
অপরিসীম। এটি বিভিন্ন সভ্যতার অর্থনৈতিক গঠন, শিল্পবিপ্লব, মহামন্দা, ঔপনিবেশিক
অর্থনীতি, বাণিজ্যযুদ্ধ এবং বিশ্বায়নের প্রভাব বিশ্লেষণ করে। যেমন, শিল্পবিপ্লব
কীভাবে উৎপাদনব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি কয়টি এবং বিমান বাহিনি সম্পর্কে জানুন
ঔপনিবেশিক শাসন কীভাবে নির্দিষ্ট অঞ্চলগুলোর অর্থনৈতিক কাঠামোকে প্রভাবিত করেছে,
কিংবা ২০০৮ সালের আর্থিক সংকট কীভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে—এসব বিষয়
অর্থনৈতিক ইতিহাসের আলোচনার অন্তর্ভুক্ত।অর্থনৈতিক ইতিহাস শুধুমাত্র অতীত
বিশ্লেষণের জন্য নয়, বরং ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক নীতি ও কৌশল নির্ধারণের ক্ষেত্রেও
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি অর্থনীতিবিদ, নীতিনির্ধারক ও গবেষকদের জন্য
অপরিহার্য একটি ক্ষেত্র।
আধুনিক অর্থনীতির জনক কে
আধুনিক অর্থনীতির জনক হিসেবে অ্যাডাম স্মিথকে (Adam Smith) বিবেচনা করা হয়। তিনি
একজন স্কটিশ দার্শনিক ও অর্থনীতিবিদ ছিলেন, যিনি ১৭৭৬ সালে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত
গ্রন্থ "The Wealth of Nations" (জাতির সম্পদ) এর মাধ্যমে অর্থনীতির মৌলিক
ধারণাগুলো প্রতিষ্ঠিত করেন। এই গ্রন্থে তিনি বাজার অর্থনীতি, শ্রম বিভাজন, মুক্ত
বাজার ও অদৃশ্য হাত (Invisible Hand) তত্ত্বের ব্যাখ্যা দেন, যা আধুনিক অর্থনীতির
ভিত্তি স্থাপন করেছে।
অ্যাডাম স্মিথের মতে, ব্যক্তিগত স্বার্থই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকা
শক্তি। তিনি ব্যাখ্যা করেন, যখন ব্যক্তি নিজের লাভের কথা চিন্তা করে উৎপাদন ও
ব্যবসা পরিচালনা করেন, তখন সমাজের সামগ্রিক সমৃদ্ধি ঘটে, যদিও এটি সরাসরি
ব্যক্তির উদ্দেশ্য নয়। তিনি "অদৃশ্য হাত" ধারণার মাধ্যমে দেখান যে বাজার নিজেই
চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্য বজায় রাখে, এবং সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়াই অর্থনীতি
স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা পেতে কতদিন লাগে বিস্তারিত জেনে নিন
শ্রম বিভাজন (Division of Labor) তত্ত্বে তিনি ব্যাখ্যা করেন যে শ্রমিকেরা যখন
নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা অর্জন করেন, তখন উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং অর্থনীতি
সমৃদ্ধ হয়। তাঁর এই ধারণাগুলো পরবর্তীতে পুঁজিবাদী অর্থনীতির ভিত্তি হয়ে ওঠে এবং
আধুনিক বাজার অর্থনীতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।অ্যাডাম স্মিথের
তত্ত্বগুলো আজও অর্থনীতি, ব্যবসা ও নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে
প্রভাবশালী।
যদিও পরবর্তীতে অর্থনীতিবিদরা তাঁর তত্ত্বের বিভিন্ন দিক পরিমার্জন করেছেন, তবুও
তাঁকেই আধুনিক অর্থনীতির ভিত্তি স্থাপনকারী হিসেবে গণ্য করা হয়। তাঁর
চিন্তাভাবনা মুক্ত বাজারনীতি, বাণিজ্যের স্বাধীনতা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের
ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, যা বর্তমান বিশ্বব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছে।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন বলতে কী বোঝো
অর্থনৈতিক উন্নয়ন বলতে একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, উৎপাদনশীলতা
বৃদ্ধি, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং দারিদ্র্য হ্রাসকে বোঝায়। এটি কেবলমাত্র মোট
দেশজ উৎপাদন (GDP) বৃদ্ধির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং শিক্ষার প্রসার,
স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আয় বৈষম্য হ্রাস, প্রযুক্তিগত
অগ্রগতি এবং জীবনযাত্রার সার্বিক উন্নয়নকেও অন্তর্ভুক্ত করে।
মূলত অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো আয় এবং উৎপাদন
বৃদ্ধি।অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান সূচক হলো জাতীয় আয় ও উৎপাদনের
ক্রমাগত বৃদ্ধি, যা দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটায়।উন্নয়নের ফলে
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নত হয়, খাদ্য, বাসস্থান ও মৌলিক সুযোগ-সুবিধা লাভ
সহজ হয়।
আরো পড়ুনঃ ১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট ফি ও প্রক্রিয়া গুলো কি কি? জেনে নিন
শিল্প, কৃষি ও সেবা খাতে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়, যা বেকারত্ব
কমায়।শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন: অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলে শিক্ষার হার
বৃদ্ধি পায়, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ সম্প্রসারিত হয়, যা জনগণের গড়
আয়ু ও জীবনমান উন্নত করে।উন্নত দেশগুলোর মতো সড়ক, রেল, বন্দর, বিদ্যুৎ,
তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি অবকাঠামোর উন্নতি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রভাব হিসেবে বলা যায় সুস্থ অর্থনৈতিক উন্নয়ন একটি
দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা, বৈষম্য হ্রাস এবং সামগ্রিক কল্যাণ বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করে। এটি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি গড়ে তোলে এবং দেশের জনগণের
জীবনযাত্রার মান উন্নত করে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত কি কি
একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কিছু মৌলিক শর্ত পূরণ করা জরুরি।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকার,
প্রতিষ্ঠান ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্ব
শর্তের মধ্যে অন্যতম শর্ত হলো স্থিতিশীল ও কার্যকর সরকার
একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং সুশাসন অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ।
নীতিগত স্থিতিশীলতা, দুর্নীতি দমন ও কার্যকর প্রশাসন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে
ত্বরান্বিত করে। এছাড়াও অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুঁজি গঠন ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি
করা অত্যন্ত জরুরী ।শিল্প, কৃষি ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ছাড়া
অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। দেশি-বিদেশি সকল বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করা এবং
অবকাঠামোগত উন্নয়নে পুঁজি সংস্থান করাও গুরুত্বপূর্ণ।
একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্ব শর্তের মধ্যে শিক্ষা ও দক্ষ জনশক্তির
গুরুত্ব অপরিসীম। মানসম্মত শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের
ভিত্তি তৈরি করে। প্রতিনিয়ত দক্ষ কর্মী তৈরির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়
এবং নতুন প্রযুক্তির উৎপাদন ও ব্যবহার সহজ হয়। অবকাঠামোগত উন্নয়ন অর্থনৈতিক
কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করতে সহযোগিতা করে।
অবকাঠামগত উন্নয়নের মধ্যে পরিবহন ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, তথ্যপ্রযুক্তি,
ব্যাংকিং ও টেলিযোগাযোগের উন্নয়ন করা অত্যন্ত জরুরী এই সকল অবকাঠামগত
উন্নয়ন না হলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বর্তমান যুগে অর্থনীতিতে উন্নয়ন
পরিচালনা করতে প্রযুক্তির ব্যবহার ও উদ্ভাবন অত্যন্ত জরুরি।নতুন
প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং তার কার্যকর ব্যবহার শিল্প ও কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি করে,
যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন একটা রূপ দেয়।
আরও রয়েছে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি মূলত শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান
সৃষ্টির মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বেকার এবং অদক্ষ জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করা
সম্ভব।শিল্পখাতের বিকাশ ও নতুন কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে বেকারত্ব হ্রাস এবং
মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য অন্যতম
গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ এবং রপ্তানি
খাতের বিকাশ অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এজন্য সকল কিছুর পাশাপাশি বাণিজ্য ও বাজার সম্প্রসারণ
এর দিকেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।এই পূর্বশর্তগুলো পূরণ করলে একটি দেশ অর্থনৈতিক
উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারে এবং জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব
হয়।
ক্লাসিক্যাল অর্থনীতির জনক কে
(Adam Smith) অ্যাডাম স্মিথ কে ক্লাসিক্যাল অর্থনীতির জনক বলা হয়। তিনি
১৭৭৬ সালে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ The Wealth of Nation এর মাধ্যমে
আধুনিক অর্থনীতির ভিত্তি স্থাপন করেন এবং ক্লাসিক্যাল অর্থনৈতিক চিন্তাধারার
সূচনা করেন।সাধারণত ক্লাসিক্যাল অর্থনীতির মূল ভিত্তি হলো বাজারের
স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থা।
অ্যাডাম স্মিথের মতে, অর্থনীতি যদি সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত না হয় এবং মানুষকে
স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হয়, তাহলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবেই
ঘটবে। তিনি "অদৃশ্য হাত" এই তত্ত্বের মাধ্যমে দেখান যে ব্যক্তিগত স্বার্থের
অনুসরণ সামগ্রিক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারে।এছাড়াও তাঁর আরেকটি
গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব হলো "শ্রম বিভাজন যেখানে তিনি ব্যাখ্যা করেন যে শ্রমিকেরা
নির্দিষ্ট কাজের ওপর বিশেষায়িত হলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং অর্থনৈতিক
উন্নয়ন ঘটে।
ক্লাসিক্যাল অর্থনীতির অন্যান্য প্রবক্তা অর্থাৎ অ্যাডাম স্মিথের পর ডেভিড
রিকার্ডো এবং থমাস ম্যালথাস এর মতো অর্থনীতিবিদরা ক্লাসিক্যাল অর্থনৈতিক
তত্ত্বকে আরও প্রসারিত করেন। রিকার্ডোর তুলনামূলক সুবিধার তত্ত্ব এবং
ম্যালথাসের জনসংখ্যা তত্ত্ব ক্লাসিক্যাল অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সবকিছুর
পরেও অ্যাডাম স্মিথের বাজার অর্থনীতি এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ধারণাগুলো
পরবর্তী অর্থনীতিবিদদের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। তাঁর চিন্তাধারা থেকেই আধুনিক
পুঁজিবাদী অর্থনীতি এবং মুক্ত বাজার ব্যবস্থার বিকাশ ঘটে। তাই, তাঁকেই
ক্লাসিক্যাল অর্থনীতির জনক বলা হয়।
রাজনৈতিক অর্থনীতির জনক কে
রাজনৈতিক অর্থনীতির জনক হিসেবে অ্যাডাম স্মিথ এবং কার্ল মার্কস উভয়কেই
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে, মূলত
অ্যাডাম স্মিথ কে আধুনিক রাজনৈতিক অর্থনীতির জনক হিসেবে গণ্য করা হয়। অ্যাডাম
স্মিথ ১৭৭৬ সালে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ "An Inquiry into the Nature and
Causes of the Wealth of Nations" (সংক্ষেপে The Wealth of Nations) এর মাধ্যমে
রাজনৈতিক অর্থনীতির ভিত্তি স্থাপন করেন।
তিনি অর্থনীতিকে শুধুমাত্র সম্পদ সৃষ্টি বা বণ্টনের বিষয় হিসেবে দেখেননি, বরং
রাষ্ট্র, নীতি, সমাজ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পারস্পরিক সম্পর্কের
আলোকে আলোচনা এবং বিশ্লেষণ করেছেন।অ্যাডাম স্মিথ এর মতে,
মুক্তবাজার অর্থনীতি ও অদৃশ্য হাত তত্ত্ব সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখে এবং
ব্যক্তি স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করে। স্মিথ বিশ্বাস করতেন যে বাজারের স্বাভাবিক
কার্যক্রম সরকারী হস্তক্ষেপ ছাড়াই কার্যকর হতে পারে এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগ
অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনতে পারে।
অন্যদিকে, কার্ল মার্কস তাঁর গ্রন্থ "Das Kapital "এ (১৮৬৭) অর্থনীতিকে একটি
শ্রেণি সংগ্রামের মাধ্যম হিসেবে দেখেছেন এবং পুঁজিবাদী সমাজের বৈষম্য ও শোষণের
উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি দেখান যে, কিভাবে অর্থনৈতিক কাঠামো রাষ্ট্র, সমাজ
ও রাজনীতির উপর প্রভাব ফেলে। মার্কসবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে রাজনৈতিক অর্থনীতি
পুঁজিবাদী শোষণ ও শ্রেণি সংগ্রামের ব্যাখ্যা প্রদান করে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো রাজনৈতিক অর্থনীতি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক কার্যক্রমের
পর্যালোচনা করে ব্যাপারটা এমন না বরং রাষ্ট্র, নীতি, ক্ষমতা এবং সামাজিক
কাঠামোর সাথে অর্থনীতির সম্পর্ককেও ব্যাখ্যা করে। বর্তমান বিশ্বে রাজনৈতিক
অর্থনীতি নীতি নির্ধারণ, বৈশ্বিক বাণিজ্য, উন্নয়ন কৌশল এবং সামাজিক
ন্যায়বিচারের মতো বিষয়গুলো বিশ্লেষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি শাখা হিসেবে
বিবেচিত হয়।
যদিও অ্যাডাম স্মিথকে আধুনিক রাজনৈতিক অর্থনীতির জনক হিসেবে গণ্য করা হয়, কার্ল
মার্কস এবং ডেভিড রিকার্ডোর মতো অর্থনীতিবিদরাও এই শাখার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ
অবদান রেখেছেন। স্মিথের বাজার অর্থনীতির ধারণা এবং মার্কসের শোষণবিরোধী তত্ত্ব
উভয়ই রাজনৈতিক অর্থনীতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
অর্থনীতির জনক কে উত্তর
অ্যাডাম স্মিথকে অর্থনীতির জনক বলা হয়।
তিনি তাঁর গ্রন্থ "The Wealth of Nations" এর মাধ্যমে আধুনিক অর্থনীতির
ভিত্তি স্থাপন করেন। মুক্তবাজার অর্থনীতি, শ্রম বিভাজন ও অদৃশ্য হাত তত্ত্বের
মাধ্যমে তিনি অর্থনৈতিক চিন্তাধারার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। তাঁর ধারণাগুলো
পুঁজিবাদী অর্থনীতির ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এজন্যই তাঁকে আধুনিক
অর্থনীতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
শেষ কিছু কথা
আশা করি ব্লগ পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে আপনারা অর্থনৈতিক ইতিহাস কাকে
বলে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে পেরেছেন পাশাপাশি আপনারা অর্থনৈতিক ইতিহাস
কাকে বলে এবং আধুনিক অর্থনীতির জনক কে সে সম্পর্কিত অনেক অজানা তথ্য গুলো জানতে
পেরেছেন। প্রতিনিয়ত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং অজানা তথ্যগুলো
সবার আগে জেনে নিতে
গুগল নিউজে
ফলো দিয়ে আমাদের সাথে যুক্ত থাকতে পারেন।
আপনাদের যদি এই পোস্টটিতে উল্লেখিত অর্থনৈতিক ইতিহাস কাকে বলে সে সম্পর্কে কোন
ধরনের প্রশ্ন কিংবা মন্তব্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন
না।
অর্থনীতি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম